জসিম উদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার
পটুয়াখালীর গলাচিপায় অবৈধভাবে সরকারী অনুমোদন বিহীন স্হানীয় প্রশাসন কে উপেক্ষা করে কোন নিয়ম নীতি না মেনে পরিবেশ বান্ধব গাছ কেটে তা পুড়ে পরিচালিত হচ্ছে ইটভাটা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গলাচিপা উপজেলার অন্তর্গত চরকাজল ইউনিয়নের বড় চরশিবা ৭ নম্ভর ওয়ার্ডে বুড়া গৌড়াঙ্গ নদীর পারের কোল ঘেষে “ভাই ভাই ব্রীকস্” যার মালিক মো. সুমন, মো. সহিদুল, মো.শাহিন ও মো. মঞ্জুরুল ইসলাম এদের নামে একটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। যার সরকারী কোন অনুমোদন নেই। তাছাড়া বিভিন্ন পরিবেশ বান্ধব গাছের লাকড়ী দিয়ে পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছে ইট। যা সরকারী আইনের সম্পূর্ন লঙ্গন। কারন সরকারী আইনে যা বলা আছে তা হল কয়লা দিয়ে ইট পোড়াতে হবে। এছাড়া নদী ভাঙ্গনের কারনে দিন দিন অনেক চাষের জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে,আর সেই নদীর পাড়ের মাটি কেটে তা দিয়ে তৈরি হচ্ছে ইট । যার ফলে প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে জলোচ্ছাস হলেই ভেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে হাজার হাজার মানুষের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। উক্ত ইটভাটার জন্য আশে পাশের এলাকার পরিবেশ দূষিত হওয়ার কারনে বিভিন্ন রোগ বালাই দেখা দিয়েছে। তাই অচিরেই এর একটা প্রতিকার হওয়া দরকার বলে স্থানীয়দের দাবী। পরিসংখ্যানে দেখা যায় গলাচিপা উপজেলায় মোট ৮ টি ইট ভাটা হল- বকুল বাড়িয়া ইউনিয়নে ২ টি, কলাগাছিয়া ইউনিয়নে ১ টি, ডাকুয়া ইউনিয়নে ১ টি, আমখোলা ইউনিয়নে ২ টি, চরকাজল ইউনিয়নে ২ টি। এর মধ্যে আমখোলা ইউনিয়নের ১টি নিবন্ধিত, বাকি ৭টি নিবন্ধনহীন ও পরিবেশ বান্ধব গাছ কেটে সেই লাকড়ী দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। সমস্ত ইট ভাটাই গড়ে উঠেছে কৃষিজমি ও নদীর কোলঘেষে। স্থানীয়রা জানান মাঝে মধ্যে দুই একটি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালিত হলে তা দুই একদিনের জন্য বন্ধ হলেও সেই ইটভাটা আবার পূনরায় চালু হয়।
সরকারী স্হাপন নিয়ন্ত্রন আইন ২০১৩ সালের আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ হয়েছে সম্প্রতি। সংশোধনীতে আইন লঙ্গনের শাস্তি বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও জরিমানার পরিমান পূর্বের চেয়ে ৫ গুন বাড়িয়েছে। লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা পরিচালনা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। জেলা প্রশাসক এর কার্যালয় থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া ইট ভাটা পরিচালিত হলে ১ বছরের বা ৫ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান আছে।
এ ব্যাপারে ইটভাটার মালিক মো. মঞ্জুরুল ইসলামকে ইটভাটায় পাওয়া না গেলে মুঠোফোনে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইটভাটার লাইসেন্স এখনও করিনি করবো। গাছের লাকড়ী দিয়ে ইট পোড়ানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জানি লাকড়ী দিয়ে ইট পোড়ানো নিষেধ তারপরও কাছাকাছি পাই বিধায় লাকড়ী দিয়ে ইট পোড়াই।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা মো. সুরিদ সালেহীন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ইতি মধ্যে একটি ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করেছি বাকি ইট ভাটা গুলোতে অভিযান পরিচালিত করবো। লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা পরিচালনা করা সম্পূর্ন বে- আইনি। এ ছাড়া গাছ কেটে লাকড়ী দিয়ে ইট পোড়ানো নিষিদ্ধ। তাই এ ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।