আল কাদরী কিবরীয়া সবুজ, গাইবান্ধা সংবাদদাতা
গত দশ মাস থেকে গাইবান্ধার বালাশী-ত্রিমোহিনী রেলপথের ব্রীজগুলোতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা খালাসী (ব্রীজ) পদের নয়জন কর্মচারি (মাষ্টাররোল) বেতন পাচ্ছেন না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদেরকে মানবেতর জীবন-যাপন করতে হচ্ছে।
অনেককেই ঋণের উপর টাকা নিয়ে সংসার চালাতে হচ্ছে। তাই অতিদ্রুত বকেয়া বেতনসহ পুনরায় বেতন চালু রাখার জন্য দাবি করেছেন কর্মচারিরা।
সৈয়দপুর রেলওয়ে বিভাগ ও খালাসী (ব্রীজ) পদের কর্মচারিরা জানান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের আওতায় ১৯৯৭ সালের নভেম্বর মাসে বালাশী-ত্রিমোহিনী রেলপথ চালু করা হয়। আর সৈয়দপুর রেলবিভাগের অধীনে এই পথের নয়টি রেল ব্রীজে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন খালাসী (ব্রীজ) পদের নয়জন কর্মচারি। তারা হলেন আউয়াল মিয়া, মোসলেম উদ্দিন, নজরুল মিয়া, জয়নাল হক, ছইদার মিয়া, হামিদুল হক, দুদু মিয়া, নুরুল ইসলাম ও দেলোয়ার। নদীতে নাব্যতা সংকটের কারণ দেখিয়ে ২০০৪ সালে ফুলছড়ির বালাশীঘাট-জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হলে রেল চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।
এরপরও খালাসী (ব্রীজ) পদের কর্মচারিরা নিয়মিতই দায়িত্ব পালন করছেন রেলব্রীজগুলোতে। ফলে দশ মাস থেকে বেতন না পেয়ে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে
মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, রেলব্রীজগুলোর পাশে ছোট্ট একটি করে ঘর তৈরি করা হয়েছে। খালাসী (ব্রীজ) পদের এই কর্মচারিরা এসব ঘরে থেকে দায়িত্ব পালন করেন।
আউয়াল মিয়া, মোসলেম উদ্দিন, নজরুল মিয়া ও জয়নাল হকসহ আরও অনেকে বলেন, ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করলেও কোন কারণ ছাড়াই জানুয়ারি মাস থেকে
আমাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। ঠিকমতো স্ত্রী-সন্তানদের ভরনপোষন দিতে পারছি না। গেলও ঈদে বোনাসও পাইনি। ফলে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছি আমরা। ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখার খরচও ঠিকমতো বহন করতে পারছি না। দেনা করে সংসার চালাতে হচ্ছে আমাদেরকে।
নজরুল ইসলাম নামে সৈয়দপুর রেলওয়ের দায়িত্বরত এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইলে বলেন, সারাদেশেই আরও অনেকের
বেতন বন্ধ আছে। শুধু এবারই তাদের বেতন বন্ধ হয়নি। এর আগেও অনেকবার তাদের বেতন বন্ধ হয়েছিল। পরে তারা একবারেই সেসব মাসের বেতন পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, তাদের বেতন দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া চলছে। সে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই তারা বেতন পাবেন। তবে সে প্রক্রিয়া শেষ হতে কত সময় লাগবে তা বলা যাচ্ছে না। সেইসাথে বালাশী-ত্রিমোহিনী রেলপথ আবারও চালু হবে বলে আশা প্রকাশ করেন
তিনি।