এসএম হাসান আলী বাচ্চু,তালা (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা:
পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (সংশোধিত) ২০০২ অনুযায়ী, আইন অমান্য করলে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার বিধান রয়েছে। আর বাজারজাত করলে ৬ মাসের জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। পরিবেশবিদদের অভিযোগ, পলিথিন নিয়ে আইন থাকলেও এর প্রয়াগ নেই।
পলিথিন উৎপাদন, বিপণন, বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ।পলিথিনের প্রসার ও বহুমুখি ব্যবহার দেখে তা বোঝার উপায় নেই। বন্ধের কোন আইন আছে । তালার প্রশাসন যেন দেখেও না দেখার ভান করছে বরং প্রশাসনের উদাসীনতায় দিন দিন পলিথিনের প্রসার ও ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম বেড়েছে।পলিথিনে সারাদেশের পরিবেশ বিপর্যস্ত,উব্ররতা হারাচ্ছে মাটি, বাতাসে ছড়াচ্ছে বিষ, ভরাট হচ্ছে নদী-খাল-বিল, পরিচ্ছন্নতা হারাচ্ছে তালার সড়ক-গলিপথ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কনিষ্ট কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পলিথিন ছেড়ে পাটের ব্যাগ ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তালা উপজেলার বাজার গুলোতে গোশত থেকে শুরু করে তরকারী, সবজি, চাল, ডাল তেল, লবণ, সাবান সহ প্রতিটি দোকানে বিভিন্ন প্রকারের পণ্য বিক্রয় করছে বিক্রেতারা । তাদের দাবি সোনলী পাটের ব্যাগের দাম বেশি । গার্মেন্ট, লবণ ও চিনিসহ ৩০ প্রকার প্যাকেজিং ও মোটা পলিথিন উৎপাদনের অনুমোদন নিয়ে শত শত কারখানায় তৈরি হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন। কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে পরিত্যক্ত বিষাক্ত পলিথিন সামগ্রী। এখন পাটের পলিমার থেকে পচনশীল ধরনের ব্যাগ তৈরি হচ্ছে। আমরা এটার নাম দিয়েছি সোনালী ব্যাগ। এই সোনালী ব্যাগ পরিবেশ দূষণ করবে না।কাজেই এই সোনালী ব্যাগটা পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।
সরজমিনে দেখা যায়,তালা উপশহরের খুলনা-পাইকগাছা সড়কের সন্নিকটে সিনেমা হলের সামনে পলিথিন ফেলার চিত্র,তালা কাচা বাজারের কপোতাক্ষ নদের ধারে পলিথিন ফেলার চিত্র,বাজারের মহিলা কলেজ রোডে পুরাতন ফুটবল খেলার মাঠে ময়লা,পলিথিন ফেলার চিত্র সহ তালা বিভিন্ন এলাকাতে দেখা যায় পলিথিন ফেলার চিত্র ।
খুচরা বাজারের দোকানদারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগে পলিথিন ব্যাগে কোনো জিনিস দিতে গেলে দোকানদাররা এদিক-ওদিক দেখে নিতেন। এখন আর তার কোনো প্রয়োজন হয় না।
জাতপুর বাজারের এক দোকানদার বলেন, পলিথিন নিয়ে অনেক দিন ধরে কোনো ঝামেলা নেই। পাইকারী-খুচরা সবই পাওয়া যায় বাজারের দোকানগুলোতেই। ক্রেতারাও পলিথিনে জিনিস নিতে কোনো দ্বিধা করেন না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পলিথিন বন্ধের আইন সত্বেও মাইকেল মধুসুধন দত্তের স্মৃতি বিজড়িত কপোতাক্ষ নদের অনেক নদ-নদী,খাল -বিল মরে যাচ্ছে, প্রাণীজ সম্পদ ধ্বংস হওয়ার মাধ্যমে পরিবেশের মহাবিপর্যয় ঘটচ্ছে। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সাথে সময়োপযোগী আইন এবং তার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, পলিথিন থেকে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া ত্বকের বিভিন্ন রোগের জন্ম দেয়।অতি সূক্ষ্ম ইথিনিল পলিমার পলিথিন তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়, যা অপচনশীল। এতে করে জমির উর্বর শক্তি নষ্ট হয়। এ ছাড়া পলিথিনে বহন করা যে কোনো ধরণের খাদ্যদ্রব্য দীর্ঘক্ষণ থাকলে বিষক্রিয়ায় তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান,পলিথিনের বিরুদ্ধে সারাদেশেই সরকারের অভিযান চললেও তালা উপজেলাতে তেমন কোন অভিযান দেখা যায়নি। তিনি বলেন পলিথিন কারখানাগুলো বন্ধ করার জন্য সরকারের উচ্চ মহলের একটা মাত্র সিদ্ধান্ত দরকার। তাতে কিছুটা হলেও পলিথিন উৎপাদন বন্ধ হবে।