সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
গলাচিপা পৌরসভার সদর রোডের ১,২, ৩,৪,৭,৮ ও ৯ নং ওয়াডে’র পাশের খালটি খনন ও পরিস্কার না করার কারণে দীর্ঘদিন ধরে এটি ময়লা আবর্জনা ও কচুরিপানায় ভরে রয়েছে। যার ফলে ওখান থেকে প্রতিনিয়ত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এবং মশা মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় খালের দু’পাড়ে বসবাসরত মানুষজন দিন দিন অতিষ্ট হয়ে উঠছেন ও বিভিন্ন রোগে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পৌর শহরের সমস্ত ময়লা আবর্জনা ও বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ-এর মাধ্যমে উক্ত ময়লা আবর্জনা ও বৃষ্টির পানি ওই খালে পতিত হয়ে পৌরসভার শান্তিবাগে অবস্থিত একটি মাত্র স্লুইজগেট দিয়ে রামনাবাদ নদীতে নি:সরণ হয়। কিন্তু খালের ওপরে থানা সংলগ্ন, হাফেজপুল সংলগ্ন ও জৈনপুরী খানকা সংলগ্ন তিনটি বাঁধ থাকার কারণে সঠিকভাবে ময়লা আবর্জনা ও পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ইতিমধ্যে ওই খালের ওপরে তিনটি গার্ডার ব্রীজ নির্মান কাজের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। এদের মধ্যে জৈনপুরী খানকা সংলগ্ন বাঁধের ওপরে ব্রীজ নির্মানের কাজ শুরু হয়েছে। বাকি দু’টির একটি হাফেজপুল সংলগ্ন বাঁধের ওপরে ও অপরটি চাঁন্দে আলী খাঁন বাড়ি সংলগ্ন পুল-এর স্থলে ব্রীজ নির্মানের কাজ পর্যায়ক্রমে সম্পন্ন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। পৌরসভাটি ১৯৯৭ সালের ১ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির হওয়া সত্ত্বেও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিক থেকে মনে হয় যেন এটি একটি নিম্ন মানের পৌরসভা। উক্ত খালের পানি এতটাই বিষাক্ত হয়েছে যে, পানি শরীরে লাগলে ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং পানির রং কালো ও রক্তবর্ণ আকার ধারণ করেছে। উল্লেখ্য, খালের দু’পাড়ে অনেক খোলা পায়খানা থাকার কারণে দুর্গন্ধ আরও বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পরেছে। বর্তমানে খালটি তার নিজ বৈশিষ্ট্য, স্বকীয়তা ও যৌবনপূর্ণ রূপ-সৌন্দর্য হারাতে বসেছে। ক্রমান্বয়ে এটি একটি মরাখাল-এ পরিণত হতে চলেছে। জাইকার অর্থায়নে খালটি খনন ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে খালটিকে ৪০ থেকে ৫০ ফুট চওড়া করে একটি সুন্দর লেক-এ রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা রয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। এখন পর্যন্তও দৃশ্যমান তেমন কোন কাজ দেখা যায় না। অথচ ২০১৫ সালে জাইকার অর্থায়নে খালটির ৩২০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে খনন কাজ ও ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করার জন্য ২ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকার টেন্ডার হয়েছে। জানা গেছে ওই খাল খননের কাজ পায় ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম.এন.মল্লিক এ্যান্ড মোনালিসা জেভি। বার বার সময় বৃদ্ধি করে ওই ঠিকাদার ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কাজ সমাপ্ত করার সময় সীমা নির্ধারণ করে নিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অতি দ্রুত খালটি খনন ও পরিস্কার না করা হলে পৌর শহরের পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভবপর হবে না। এতে করে পৌর শহরের শিশু থেকে বৃদ্ধরাও ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড, ডায়েরিয়া, আমাশয় সহ বিভিন্ন ভাইরাস জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন আরও বেশী মাত্রায় ছড়িয়ে পরার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানে কম’রত মু. আমিনুল ইসলাম বলেন, চলতি বর্ষা মৌসুম শেষে আমরা কাজটি শুরু করব এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে আশা রাখি। এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পৌর মেয়র মোসা. আঞ্জুমান আরা করুণা জানান, খাল খনন কাজের টেন্ডার অনেক আগেই সম্পন্ন হয়েছে।কিন্তু ঠিকাদার বার বার সময় বাড়িয়ে ঠিকাদারকে কাজ শেষ করার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আশা করছি আসন্ন শীতের মৌসুমের মধ্যেই কাজটি শেষ হবে।
